শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা শহরে জমির দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় ভূমিদস্যুরা হাঁকডাক দিয়ে দিন দিন উপজেলার সরকারি খাল দখলে মড়িয়া হয়ে উঠেছে।
এক সময়ের উপজেলার খরস্রোতা খালটি ভূমিদস্যুদের কারণে আজ কোথাও নিশ্চিহ্ন আবার কোথাও সরু নালায় পরিণত হয়েছে। সেই খাল ও নালা নানা কৌশলে দখলে নিলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করতে পারছেন না। খালটি দখলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা, উঠতি পয়সাওয়ালা ও জনপ্রতিনিধিরা জড়িয়ে থাকায় রাজাপুর উপজেলা প্রশাসনও রহস্যজনক নীরবতা পালন করছে। এতে আরও উৎসাহী হচ্ছে ভূমিদস্যুরা। এ কারণে সচেতন মহলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে ভূমিদস্যুরা দিনের পর দিন খাল দখল করে একের পর এক অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় একের পর এক খাল দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে খালের মাঝ পর্যন্ত পাকা ঘর নির্মাণ করেছে ভূমিদস্যুরা। সবকিছু দেখেও রাজাপুর উপজেলা প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।
রাজাপুর উপজেলা সদরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের পুরোন বাজারের দক্ষিণ মাথার কামার পট্টি থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ দিক হয়ে জেল খানার পিছন থেকে বাইপাস মোড় এলাকা হয়ে বর্তমান পল্লিবিদ্যুত অফিসের সামনা হয়ে দক্ষিণ রাজাপুরের তুলাতলা এলাকার মধ্যদিয়ে পূর্ব দিকে জাঙ্গালিয়া নদীর সাথে ভারানি খাল হিসাবে মিসেছে। বাঁকে বাঁকে এই খালটি প্রায় দীর্ঘ চার কিলোমিটার খালটির বিভিন্ন স্থানে ময়লার ভাগার, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক বাড়ি নির্মান করে খালটি দখল করা হয়েছে এবং এর ফলে স্রোত বন্ধ হওয়ায় বিভিন্ন অংশ নালায় পরিনত হয়েছে। এর কারণে বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির পানি জমা হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা নদীর রূপে পরিণত হয়ে যায়। স্বয়ং রাজাপুর উপজেলা প্রশাসনও স্বীকার করেছে খাল দখলের বিষয়ে তাদের কাছেও অনেক অভিযোগ রয়েছে।
অহিদ সাইফুল, সাজিত হোসাইন সাজ্জাত, এনামুল খান, শাহজাহান মোল্লা সহ একাধীক স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা জানান, মধ্য বাজার এলাকা থেকে বয়ে যাওয়া ভারানি খালটি জেলখানার পেছনের এলাকা হয়ে টিঅ্যান্ডটি সড়কের মধ্য দিয়ে বাইপাস এলাকার ব্রিজ হয়ে তুলাতলার দিকে বয়ে গেছে। দখলে খালটির মৃতপ্রায় অবস্থার কারণে নৌকায় করে বাজার আসা, স’মিল ও ধান মিলে ধান নেয়া, বাজারের মালামাল বহনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। জোয়ারের সময় সামান্য পানি থাকলেও ভাটায় খালে পানিই থাকে না। এ কারণে শহরের কোথাও আগুন লাগলেও পানির সঙ্কট দেখা দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পানির উৎস পাওয়া যায় না। এ ছাড়া খালটি ও তার ছোট ছোট শাখা নালাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি হলেই আশপাশে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বাইপাস এলাকার নব আ’লীগ অফিস-সংলগ্ন এলাকার খালটি ভরাট করে বাড়ি নির্মানের কাজ করার বিষয়টি চোখে পড়ার মতো হলেও প্রশাসন নীরব বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজাপুর উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা অভিজিৎ মজুমদার বলেন, সরকারী খালের জমির মালিকানা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি খালটি উদ্ধার করে দিলে খালটি খননের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়সমিন বলেন, চলতি জানুয়ারী মাসে বিএডিসি’র প্রকল্প পাওয়ার কথা রয়েছে। ওই প্রকল্প বরাদ্দ পেলে খালটি উদ্ধার করে একই সাথে খননের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply